ডায়েবেটিস একটি শর্করা জাতীয় খাদ্যের বিপাক প্রক্রিয়াজাত জটিলতাজনিত রোগ। ইনসুলিন একটি আগ্নাশয় নিঃসৃত হরমোনের অভাভজনিত কারণে ডায়েবেটিস রোগ হয় এবং অনেক সময় ইনসুলিনের প্রতিদ্বন্দ্বী Growth Hormone বেশি থাকলে ডায়েবেটিস হয়ে থাকে।
ডায়েবেটিস হলে শরীরের বিভিন্ন প্রান্তে গ্লুকোজ ব্যবহার কমে যাওয়ার জন্য রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং যার ফলে প্রসাবের সাথে গ্লুকোজ বের হয়। ঘনঘন পানির পিপাসা হয়, বেশি বেশি প্রসাবহয় ও শরীরে পানিশুন্যতা দেখা দেয়।
চোখের ওপর ডায়েবেটিসের প্রভাব ও চোখের বিভিন্ন পরিবর্তন কতদিন যাবৎ ডায়েবেটিস আছে তার ওপর নির্ভর করে। অপর্যাপ্ত ডায়েবেটিস কন্ট্রোলের কারণেও কখনো কখোও চোখের পরিবর্তন হয়।
ডায়েবেটিক রেটিনোপ্যাথী চোখের অন্যতম প্রধান সমস্যা। চোখের দৃষ্টিশক্তির ওপরও ডায়েবেটিসের প্রভাব আছে। চোখের লেন্সে পুষ্টিহীনতা ও রাসয়নিক পরিবর্তনের কারণে লেন্সের আকার বৃদ্ধি পায়। প্রতিসরাঙ্ক বা রিফ্রাক্টিভ ইনডেক্স পরিবর্তনের ফলে হ্রস্ব দৃষ্টি বা মায়োপিয়া এবং কাছে দেখতে অসুধিা হয়।
ডায়েবেটিসের কারণে চোখে যে সমস্ত সমস্যা হয় তা নিম্নরূপ
ক. ডায়েবেটিসজনিত ছানি: এটা ২ ধরনের হয়। (১) বয়স্ক এবং ডায়েবেটিক রোগীদের ছানি যাদের ডায়েবেটিস নাই তাদের চেয়ে তাড়াতাড়ি হয়। (২) জুভেনাইল ডায়েবেটিস রোগীদের ছানি অল্প বয়সেই হয়।
খ. কনজাংটিভার পরিবর্তন: শিরাগুলো প্রসারিত হয় এবং শিরার শেষ ভাগের ক্যাপিলারিগুলো লম্বা হয়। ধমনী শিরার আনুপাতিক হার ১:৭ হয়।
গ. আইরিসের পরিবর্তন: এখানে পানি জমে ও আইরিস ফুলে যায় এবং পিগমেন্ট এপিথেলিয়াম নষ্ট হয়। আইরিসের প্রদাহ হয়, নতুন রক্তনালী তৈরি হয় এবং চোখের ভিতর রক্ত জমে।
ঘ. ভিট্রিয়াস ও রেটিনাতে রক্তক্ষরণ হয় ও নতুন রক্তনালী তৈরি হয়।
ঙ. স্নায়ু বৈকল্য, ট্যারা চোখ ও দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হয়।
চ. ডায়েবেটিক রোগীদের গ্লুকোমা থাকতে পারে।
ডায়েবেটিস রোগীদের অনেকেরই ধারণা যে, তাদের চোখের চিকিৎসা শুধুমাত্র ডায়েবেটিস হাসপাতালেই সম্ভব। এই ভেবে তারা সবাই ডায়েবেটিস হাসপাতালে ভিড় জমায় এবং নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়। কিন্তু ডায়েবেটিস রোগীদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল সরকারি মেডিকেল কলেহ হাসপাতালে ডায়েবেটিস রোগীদের ছানিসহ সকল রোগের চিকিৎসা সফলভাবে নির্বিঘ্নে করা হয়। উল্লেখিত হাসপাতালগুলোতে ডায়েবেটিসসহ চোখের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন এবং অন্যান্য সকল বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। যারা ডায়েবেটিস রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা করে থাকেন।